দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজরিত পূণ্যভূমি সিলেটের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৬ সালে সিলেটের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন মেডিকেল এলাকায় স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু হয় এ হাসপাতালের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ও সংযুক্ত বার্মা ফ্রন্টের জন্য এটাকে Cater এ রুপান্তরিত করা হয়। ১৯৪৮ সালে সিলেট মেডিকেল স্কুল হিসেবে উন্নীত হয়।
Licentiate of Medical Faculty (LMF) ডাক্তার সার্টিফিকেট প্রদান শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এর কলেবর। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩০০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। পাঁচ বছরের কোর্স শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রদান করা হতো MBBS ডিগ্রী। জন সাধারনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও কলেজ এবং হাসপাতালের প্রয়োজনে ১৯৭৮ সালে বর্তমান অবস্থান কাজল হাওর এলাকায় সুবিশাল পরিসরে ২৫ একর ভূমি নিয়ে ৫০০ বেডের হাসপাতাল হিসেবে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতাল বিল্ডিং এরিয়া ৪,২৮,০০০ বর্গফুট। ১৯৯৮ সালে হাসপাতালের বেড সংখ্যা ৯০০তে উন্নীত করা হয় শুধুমাত্র খাদ্য ও MSR বৃদ্ধির মাধ্যমে। কিন্তু জনবল রয়ে গেছে আগের মতো।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ হাসপাতাল ছিল অনন্য ভূমিকা। এতদঞ্চলে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় এই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ ছিলেন নিবেদিত প্রান। শহীদ হয়েছেন ডাঃ শামসুদ্দীন আহমদ, ডাঃ শ্যামল কান্তি লালা, ডাঃ কর্ণেল জিয়াউর রহমান, ড্রাইভার কোরবান আলী, সেবক মাহমুদুর রহমানসহ আরো অনেক। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক সিলেটের কৃতিসন্তান বঙ্গবীর মোহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর নামকরণ করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নতর চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমাদের গর্ব, বৃহত্তর সিলেটবাসীর অহংকার এবং স্বাস্থ্য সেবার আশা ভরসার স্থল এই হাসপাতালে সংযোজিত হচ্ছে নতুন নতুন বিভাগ এবং হাইটেক টেকনোলজী সুবিধা। এই অঞ্চলের প্রায় দেড় কোটি মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বাস্থ্য সেবা অত্যন্ত সুনামের সাথে দিয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।